গ্রামের বাড়িতে গোখরা সাপে উদ্বার করলেন সাপুরে।সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদন:পশ্চিমবঙ্গের বাংলায় এই সাপকে গোখুরা বা গোখরো বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে এই সাপকে বলা হয় খড়িস। এই সাপটি ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বিষধর সাপ। এই প্রজাতির সাপ বৃহৎ নাজা গনের অর্ন্তভুক্ত এবং সাপে কাটার সংখ্যা বিচারে এটি অন্যতম একটি সাপ।

সাপ-সর্প-নাগ; বাংলাভাষায় তাদের যে নামেই ডাকা হোক না কেন, মানুষের মনে তা ভীতি সঞ্চার করতে যথেষ্ট। বিশ্বের সব দেশের মানুষই কম-বেশি সর্প আতঙ্কে ভুগে থাকে। অবশ্য তার কতটা বিষ দংশনের ভয়ে আর কতটা কুসংস্কারের জন্য, তা বলা মুশকিল।

সাপ! মানুষের মনের কোণে গেঁথে থাকা প্রাচীন ভয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু প্রশ্ন জাগতেই পারে, মানুষ কেন সাপ ভয় পায়? দেখতে ভীতিকর বলে? তা হতে পারে—পা নেই, বুকে ভর দিয়ে এগিয়ে চলা, মাটির সাথে মিশে চলা প্রাণীরা মানুষের চোখে কিছুটা অস্বাভাবিক লাগতেই পারে।

সেইসাথে রয়েছে সাপের বিষের ভয়—হ্যাঁ! এটা মূল কারণ বৈকি। এছাড়াও রয়েছে সাপ না চেনা, সাপের ব্যাপারে না জানার বিষয়। তা না হলে এদেশে সারা বছর মানুষের হাতে মারা পড়া সাপগুলোর অধিকাংশই যে নির্বিষ এবং অপরদিকে প্রতি বছর সাপের দংশনে গড়ে মারা যাওয়া সাড়ে ছয় হাজার মানুষের মধ্যে অধিকাংশই কুসংস্কার বা ভীতির কারণে হার্টঅ্যাটাক এবং ওঝাদের ভুল চিকিৎসা কিংবা অবহেলার কারণে মৃত্যু—এই ঘটনাগুলো মোটেই ঘটত না।

বনের সাপে কাটে না, মনের সাপে কাটে। হ্যাঁ, মনের ভয়টাই আমাদের বেশি দূর্বল করে তোলে। সাপের নাম শুনলেই আমরা ভয় পাই, সাপ দেখলে তো কথাই নেই। অথচ বাংলার বিস্তৃত নদী-নালা-সবুজ প্রকৃতির মাঝেই যে সাপের চির আবাস! তাকে এড়াবেন কী করে?

বিষধর সাপ ফণা তুলে এগিয়ে আসছে—এমন দুঃস্বপ্ন প্রায় প্রত্যেকেই দেখেছে, কারণ যা-ই হোক। সাপের ফণা তাই দুঃস্বপ্নেরই এক নাম বটে! আর সেই ভয় থেকেই ফণা তোলা গোখরা সাপ মানুষের চোখে ভীতির কারণ। চতুর সাপুড়েরাও এই সুযোগে গোখরার খেল দেখিয়ে, নানা কুসংস্কার ছড়িয়ে তাবিজ ইত্যাদি বিক্রির অজুহাতে টাকা কামাইয়ের উপায় খুঁজে নেয়।

অথচ বিষের তীব্রতা কিংবা যদি বিষ প্রয়োগের ক্ষেত্রেও ধরি, গোখরার চেয়েও অধিক বা এর কাছাকাছি অনেক বিপজ্জনক সাপ রয়েছে বাংলাদেশে। কেউটে বা কমন ক্রেইট, চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার), এমনকি সবুজ বোড়া (পিট ভাইপার)—এরাও কিন্তু মানুষের জন্য কোনো অংশে কম বিপজ্জনক নয়! সামুদ্রিক অনেক সাপই তো এর চেয়ে মারাত্মক বিষধর।

সেগুলোর মধ্যে ইয়েলো বেলিড সি স্নেক, হুকনোজড স্নেক (বড়শি নাক সামুদ্রিক সাপ) এগুলো তো তীব্র বিষের অধিকারী। কিন্তু তারপরেও অধিকাংশ মানুষের মনে সাপ বলতেই চোখে ভাসে ফণা তুলে ফোঁসফোঁস করতে থাকা, রাজসিক ভঙ্গির এক প্রাণীর কথা। অর্থাৎ, ভয়টা সাপের প্রতি তো রয়েছেই, সাপের ফণার প্রতিও রয়েছে আমাদের আলাদা ভীতি। সন্দেহ নেই, সাপের ফণাই সাপকে আরও ভীতিকরভাবে উপস্থাপন করে আমাদের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *