হুবহু মানুষের মত করে বাদাম এর খোসা ছাড়িয়ে বাদাম খাচ্ছে আর গল্প করছে একদল বানর। ইন্টারনেটে সাড়া জাগিয়ে তুমুল ভাইরাল সেই ভিডিও।

নিজস্ব প্রতিবেদন:বানর, বান্দর বা বাঁদর এক প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী। মূলত সিমিয়ান প্রাইমেট গণের তিনটি দলের মধ্যে দুইটির সদস্যরা সাধারণ ভাবে বানর নামে পরিচিত। এই দলগুলি হলো, নতুন পৃথিবীর বানর, পুরাতন পৃথিবীর বানর এবং নরবানর। এদের প্রধানত দেখা যায় দক্ষিণ এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায়।

চিনা বাদাম পছন্দ করে না এমন লোক খুজে পাওয়া বেশ কষ্টই হবে বটে। অবসরে বা আড্ডায় সঙ্গ দিতে চীনাবাদামের জুড়ি নেই। বাংলাদেশে তো বটেই সারা বিশ্বজুড়ে চীনাবাদাম ‘টাইমপাস ফুড’ হিসেবে জনপ্রিয়। পৃথিবীতে যত ধরনের বাদাম উৎপাদন হয়, চীনাবাদাম তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয়।

কাঁচা এবং ভাজা বাদাম তো বটেই, চীনাবাদাম মাখন, জ্যাম, চানাচুর, কেক, বিস্কুট, তরকারি, ভর্তা, তেল ইত্যাদি তৈরিতেও এর কোন জুড়ি মেলা ভার। চীনাবাদামে ‘চীন’ শব্দটা থাকলেও এটা প্রথম আবিষ্কৃত হয় দক্ষিণ আমেরিকায়।প্রাচীনকালেও এর চাষ করা হতো বলে এর নিদর্শন পাওয়া যায়। পেরুর লিমায় প্রাপ্ত বহু প্রাচীন পাত্রের গায়ে বাদাম গাছের ছবি অংকিত দেখা যায়।

ধারণা করা হয়, ইনক সভ্যতার সময়েও বাদাম খাওয়ার প্রচলন ছিল। কারণ, ইনকাদের মৃতশি্ল্প এর মধ্যে বাদামের আকৃতির পাত্র পাওয়া গেছে। চীনাবাদাম ইউরোপে নিয়ে আসে স্প্যানিশরা। তামাকপাতার মতো তখন বাদামও ব্যবহার হতো বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে। পরে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা চীনাবাদাম আফ্রিকায় নিয়ে যায়।

তারা হাতির দাঁত ও মশলার বিনিময়ে আফ্রিকানদের চীনাবাদাম দিত।অবশেষে আফ্রিকান ক্রীতদাসদের মাধ্যমে আফ্রিকা থেকে বাদাম প্রবেশ করে উত্তর আমেরিকায়। যুক্তরাষ্ট্রে চীনাবাদাম খাওয়ার প্রচলন শুরু হয় তাদের গৃহযুদ্ধ হওয়ার আগে। তবে তখন তা গৃহপালিত পশুদের খাবার হিসেবেই বেশি প্রচলিত ছিল। যুদ্ধের সময় খাদ্য সংকট দেখা দিলে কিছু সৈনিক বিকল্প খাদ্য হিসেবে বেছে নেয় চীনাবাদাম।

পরে ধীরে ধীরে তা সৈনিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর পিটি বারনাম নামে এক সার্কাস দলের মালিক সার্কাস চলাকালে বাদাম ভেজে বিক্রি করা শুরু করে এবং বাদামভাজা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। অনেক ফেরিওয়ালাই তখন আয়ের নতুন উপায় হিসেবে চীনাবাদাম ভাজাকে বেছে নেয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে চীনাবাদামের মোট উত্‍পাদনের ৪১ ভাগ চীন উৎপাদন করে।

এ কারণেই বোধহয় এ বাদামকে চীনাবাদাম বলা হয়। চীনা বাদামের ইংরেজি নাম Ground nut। যাবতীয় বাদামের মধ্যে একমাত্র চীনাবাদামই মাটির নিচে জন্মে। এর বৈজ্ঞানিক নাম apios americana। তবে বিশ্বজুড়ে চীনাবাদাম Peanut নামেই পরিচিত। এর নাম পিনাট হওয়ার কারণ হলো এটা দেখতে ‘পি’ বা মটরদানার মতো। একে ‘মাংকিনাট’ও বলা হয়। বানর সম্প্রদায়ের এই বাদাম বিশেষ প্রিয় বলেই হয়তো এই নামকরণ!

অন্যান্য বাদামের তুলনায় চীনাবাদাম খুব সহজলভ্য বলেই হয়তো অনেকেই একে পাত্তা দিতে চান না। কিন্তু খাদ্যগুণে চীনাবাদাম কোনো অংশেই কম নয়।তবে চিনাবাদাম যতটা পছন্দ করে মানুষে। তার মতই বনের বানর ও চিনা বাদাম খেতে খুব ভালোবাসে। এরকমই একটি ভিডিও সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে বনের সকল বানর একসাথে জড়ো হয়েছে।

এবং সেখানে এক ব্যক্তি কার্টুন ভর্তি করে চিনাবাদাম এনে বানরদেরকে খাওয়াচ্ছে। এবং ব্যক্তি যেখানে যাচ্ছে বানরগুলো তার পেছনে পেছনে ছুটছে বাদাম খাওয়ার জন্য। সত্যিই ব্যক্তিটি অনেকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। পশু পাখিদের সাথে এমন আচরণ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *