নিজস্ব প্রতিবেদন: আমরা সব সময় বাইকের সিসি বিবেচনা করি। আমরা এটা ভাবি যে সিসি বেশি হওয়া মানেই সেই বাইকের স্পিড বেশি হবে। কিন্তু সত্যিই কি সিসি বেশি হওয়া মানেই সেই বাইকের স্পিড বেশি হবে এবং সিসি বাইকের সাথে কতটুকু সম্পর্কযুক্ত। এ সম্পর্কে আমরা আজকে জানবো। সম্পূর্ণ বিষয়টি জানতে পুরোটা সময় আমাদের সাথে থাকুন। চলুন দেরী না করে দেখে নেয়া যাক বাইক সম্পর্কে কিছু তথ্য। প্রথমেই জেনে নেয়া যাক সিসি কি। ইঞ্জিনের মধ্যে গোলাকার পাইপের মত একটা ফাঁকা জায়গা থাকে।
যেটাকে বলা হয় সিলিন্ডার।আর এই সিলিন্ডার এর মধ্যে পিস্টন লাগানো থাকে। যার মাথায় আগুন জ্বালিয়ে সেটাকে ওঠানো-নামানো করা হয় । সেটা একটা কানেক্টিং রড দিয়ে জোড়া থাকে আরেকটা বাঁকানো রড এর সঙ্গে ।যেটাকে বলা হয় ক্রাংকশ্যাফট । আর এই ক্রাংকশ্যাফট সমান যেতে যেতেহঠাৎ করে একটুখানি বাকিয়ে দেয়া হয় আর সেখানেই লাগিয়ে দেয়া হয় পিস্টনের কানেক্টিং রড টা । এর ফলে কি হয় ওপরে নিচে ওঠানামা করলে রানিং হয়। আর তারপরেই ঘূর্ণন শক্তিটাকে ক্লাস এবং গিয়ার বক্স এর মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় চাকাতে।
এই জিনিসটার মত সেলাই মেশিনে দেখে থাকবেন। সেখানে দেখবেন মেশিনের পাদানি একটা কানেক্টিং রডের মত একটা ঢাকা রড এর সঙ্গে যুক্ত থাকে। যার ফলে পা চালনা করলে মেশিনের সঙ্গে লাগানো চাকা ঘোরে । ঠিক সেই নিয়মটাই ইঞ্জিনেও ব্যবহার করা হয়েছে। সেলাই মেশিনে যেমন চাকাটা ঘোরানোর জন্য পায়ের পাদানিটা আপডাউন করতে হয় এই ইঞ্জিনের ক্রাংক সাপটাকে ঘোরানোর জন্য পিস্টনটাকে আপডাউন করতে হয়।
এখানে পিস্টন সিলিন্ডারের ভিতর আপ-ডাউন করছে মানে যে ফাঁকা জায়গাটা ওই জায়গাটা হল সি সি। সি সি এর পুরো অর্থ হল কিউবিক ক্যাপাচিটি ।আমরা যারা টুকটাক মুখো জানি তারা এটা তো জানি যে কোন জিনিসের ঘনত্ব মাপতে গেলে সেটাকে কিভাবে মাপতে হয়। তাই ইঞ্জিনে ভিতরে কতটা ফাঁকা জায়গা আছে সেটাকে কিউবিক সেন্টিমিটার এ মাপা হয়। আর সেটাকেই ছোট শব্দে বলা হয় সিসি।ধরুন একটা লুডুর ছক্কা তার প্রতিটা তলের মাপ যদি সেন্টিমিটার করে হয় তাহলে সেটা 1cc হলো ।
আর লুডুর ছক্কা সাধারণত এরকম 1 সেন্টিমিটার সাইজের হয়। তাই কোন 150 সিসির বাইক মানে সেই বাইকের সিলিন্ডারের জায়গাতে ঐরকম লুডোর ছক্কা 150 ঢুকে যাবে।এটাই হলো সিসি। রয়েল এনফিল্ডএর বাইক গুলো বেশি সিসি হওয়া সত্ত্বেও এর টপ স্পিড কম হওয়ার পিছনে কারন হল এর সিলিন্ডার এর আকৃতি। পৃথিবীর সমস্ত বাইকে সিলিন্ডারের আকৃতি অনুযায়ী তিন ধরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। একটা হল আন্ডার স্কয়ার,দু’নম্বর হলো স্কয়ার,এবং তিন নম্বর হলো ওভার স্কয়ার।
এগুলো সিলিন্ডার এর আকৃতি অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে। আর এই কারনেই সিসি বেশি হলেও সব সময় টপ স্পিড বেশি নাও হতে পারে। ইঞ্জিনের সিসি একই রেখেও সিলিন্ডারের ওভার স্কয়ার গঠন এবং আন্ডারওয়ার গঠনের মাধ্যমে স্পিড কমানো বাড়ানো যায়। কারণ সিসি মানে হলো সিলিন্ডারের ভিতরে ফাঁকা জায়গাটা। ওই জায়গাটা তো সমান হতে পারে। ওভার স্কয়ার এবং আন্ডার স্কয়ার এর মধ্যে সিলিন্ডারের ওই ফাঁকা জায়গাটা তো সমান হতে পারে।
যেমন ধরুন একটা সমান সাইজের বাটি এবং গ্লাসের মত।এখানে বাটিটা তে যে পরিমান জল ধরে গ্লাসটাতেও ততটাই জল ধরে। তাই এবিসি সমান। কারণ ওই জলধারার জায়গাটাই তো ফাঁকা জায়গা তাই এদের সিসি সমান কিন্তু বাটিটা চ্যাপ্টা বলে বলা হবে ওভার স্কয়ার এবং গ্লাসটাকে লম্বা বলে বলা হবে আন্ডার স্কয়ার । সিসি বেশি মানে অবশ্যই স্পিড বেশি এর সঙ্গে ম্যাটার করে ।কারণ সিসি বেশি মনে বড় জায়গা বড়, জায়গা মানে বেশি বাতাস বেশি জ্বালানি,আর বেশি বাতাস বেশি জ্বালানি মানে বেশি শক্তি ।
বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুনঃ