নিজস্ব প্রতিবেদন: গাছ পরিবেশের পরম বন্ধু। প্রাণীকুলের সাথে উদ্ভিদকুলের পরম একটি সম্পর্ক রয়েছে। তা হচ্ছে নিঃশ্বাসের সম্পর্ক। উদ্ভিদ জগত আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের খোরাক যোগায়। আমরা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস এর সাথে যে অক্সিজেন গ্রহণ করি তার যোগান দেয় উদ্ভিদজগত। আর আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করি তা উদ্ভিদ জগত গ্রহণ করে। কোটি কোটি বছর ধরে এই উদ্ভিদ জগত আমাদের অক্সিজেনের যোগান দিয়ে আসছে। তাই আমাদের উচিত উদ্ভিদ জগতের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরন করা।
কিন্তু আমরা ঠিক তার উল্টোটা করছি। আমরা দিন দিন বিভিন্নভাবে উদ্ভিদ জগতকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। মানুষের প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলছি। যা আমাদের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি দিক। আজকের এই ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তির উদ্ভিদের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণের গল্পটি তুলে ধরা হয়েছে।একসময় ইন্ডিয়ার ব্রহ্মপুত্র নদীর তীর ঘেঁষে মাদলি নামক এই দ্বীপটি পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম নদীবেষ্টিত উপদ্বীপ ছিল। যারা এখন এগারোশো বর্গ কিলোমিটার।
কিন্তু হঠাৎ করে এই দ্বীপটির চেহারা বদলে যায়। 1979 সালে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে এ দ্বীপটি বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে থাকা গাছপালাগুলো পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। তার সাথে সাথে এখানে বসবাসরত বিভিন্ন প্রাণী জগৎ সহ মানব বসতির প্রচুর পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়। তখন অনেকে ধারণা করে এই দ্বীপটি পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। যার জন্য কেউ কোনো কিছু করতেও এগিয়ে আসেনি। তখন আমি গ্রামের 16 বছর বয়সে কি যুবকের সামনে এসকল ঘটনাগুলো ঘটে যায়।
এবং সে মনে মনে চিন্তা করে সে যেভাবেই হোক এই সুন্দর দীপ্তি কে সে আবার জীবিত করবে। তাই সে লোকাল গভর্মেন্ট এর কাছে সাহায্য চাইতে যায়। কিন্তু লোকাল গভর্নমেন্ট তাকে কোনো ওরকম সাহায্য না করে এই মরুভূমিতে উদ্ভিদ জন্মাবে না বলে আরও হতাশ করে দেয়। কিন্তু সে পরেরদিন প্রতিজ্ঞা নিয়ে বৃক্ষরোপণ শুরু করে । সে প্রথমে দশটি বাঁশের চারা রোপন করে পরীক্ষা করার জন্য। এবং সে দেখতে পেল এই মরুভূমিতে বাঁশের চারা গুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এবং সে প্রতিদিন এরকম বাঁশের চারা রোপণ করতে থাকে।
তার সাথে আরও বিভিন্ন ধরনের বড় বড় গাছের চারা রোপণ করতে শুরু করে। একসময় ধীরে ধীরে শুধু একটি মানুষের প্রচেষ্টায় প্রদীপটি সবুজে বেষ্টিত একটি কৃত্রিম বনে রূপ নেয়। এবং আস্তে আস্তে বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি এসে এই জঙ্গলে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এক সময় এই বনটি তৈরি হয় বিভিন্ন বন্য পশু পাখির আবাসস্থল। হাতি সহ বিভিন্ন বন্য জন্তু জানোয়ার বিভিন্ন জঙ্গল থেকে এসে এই জঙ্গলে বসবাস করতে শুরু করে। যা দেখে সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিল। এবং সে তার কর্মের ফলে লোকাল গভর্মেন্টের চিন্তাধারা পুরোপুরিভাবে পদ্ধতি।
পরবর্তীতে লোকাল গভর্নমেন্ট এসে তাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। অথচ একসময় তাকে কেউ চিনত না। একবার একজন ফটোগ্রাফি এসে তার এই কৃত্রিম বনের বিভিন্ন ছবি ধারণ করে এবং ওই ছবিগুলো গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এবং পরে সবাই এই জঙ্গল এর পুরো ঘটনা শুনে অবাক হয়ে যায় যে একজন মানুষের প্রচেষ্টায় কিভাবে এত বড় মরুভূমি একটি কৃত্রিম বলে পরিণত হতে পারে। তখন তিনি সকলের প্রশংসায় প্রশংসিত হয়। সে এখনও ঐ বনটির জন্য বিভিন্নভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। সে তার বোন ছেড়ে কোথাও যায়নি।
এখনো সে তার বনের ধারে একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করছে। তার এই কর্মের ফলে তাকে ইন্ডিয়া বাসি দা ফরেস্ট ম্যান নামে আখ্যায়িত করেন। এবং তিনি কয়েকটি সম্মানপূর্বক এনভারমেন্ট অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। এই ঘটনাটি আমাদের বিভিন্নভাবে অনুপ্রাণিত করে। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় এই কথাটির বাস্তব প্রমাণ এই বনটি। আমরা আমাদের পরিবেশ বাঁচাতে হলে এভাবে প্রত্যেকে বৃক্ষ রোপন করা উচিত। বৃক্ষ নিধন করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বিরত রাখতে হবে। একজনের প্রচেষ্টায় কিভাবে একটি মরুভূমি একটি কৃত্রিম বনে রূপান্তরিত হল তা বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখার অনুরোধ রইলো।
বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুনঃ