পোস্ট অফিসের নয়া স্কিম, ১৫০ টাকা সেভিংস করে পান ২৫ লক্ষ টাকা,দেখে নিন পদ্ধতি গুলো

সারা ভারত জুড়ে ভারতীয় পোস্ট অফিসের শাখা ছড়িয়ে আছে আর গ্রাম থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলে। বর্তমানে পোস্ট অফিসের গ্রাহক সংখ্যা কোটি কোটি। এই পোস্ট অফিস যেমন কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত একটি সংস্থা তাই বিশ্বাস ও ভরসার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান। সরকারি ব্যাংকগুলির পরেই বা অনেক জায়গায় তার আগেই অবস্থান করে গ্রাহক সংখ্যার নিরিখে। স্বল্প সঞ্চয় থেকে শুরু করে বড় মূলধন জমা দেওয়ার বা ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে রাখার জন্য এখনও অনেকেই বিশ্বাস করেন এই পোস্ট অফিসকেই তাই পোস্ট অফিসে আছে বিভিন্ন সঞ্চয় মূলক পরিষেবা বা স্কীম যেখানে অল্প কিছু মূল্য বা অর্থ যদি আপনি নির্দিষ্ট হারে জমা দিতে পারেন তাহলে পাবেন এক লপ্তে অনেকগুলি টাকা কারণ পোস্ট অফিসে সুদের হার বেশ কিছু শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকের তুলনায় বেশি।

এখনো গ্রামীণ ভারতের বহু মানুষ পোস্ট অফিসে তাদের টাকা রেখে একপ্রকার নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন কারণ এখানে আপনার টাকা আত্মসাৎ হওয়ার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে ।আর যেসব সঞ্চয়ী প্রকল্প পোস্ট অফিসে বর্তমানে চালু আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো পিপিএফ প্রকল্প ।যার মাধ্যমে আপনি একটা নির্দিষ্ট হারে টাকা জমা দিলে একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর হতে পারেন লাখপতিও। পোস্ট অফিসে পিপিএফ প্রকল্পের সুবিধা: পোস্ট অফিসে যেখানে মানুষ সাধারণত স্বল্প মূল্য জমা রাখেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বেশ কিছু সরকারি কর্মচারী বা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী তাদের ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চিত করে রাখেন বিভিন্ন প্রকল্পে এদের মধ্যে অন্যতম হলো পি পি এফ প্রকল্প। যেখানে আপনি সামান্য পরিমাণ টাকা নির্দিষ্ট হারে একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে জমা দিলে বেশ আকর্ষণীয় যেমন পাবেন তেমনি হতে পারবেন ভবিষ্যতে লাখপতি।

আপনার বর্তমান বয়স যদি ২৫ থেকে ৩০ বছর হয়ে থাকে তাহলে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সেই আপনি পোস্ট অফিসে পি পি এ প্রকল্পের মাধ্যমে জমা করতে পারেন একটা বিশাল অঙ্কের টাকা। যা একদিকে আপনার ভবিষ্যৎকে যেমন সুরক্ষিত করবে তেমনি আপনার বর্তমানকে করবে চিন্তামুক্ত । পিপিএফ একাউন্ট খোলার নিয়ম: ভারতবর্ষের প্রায় সব কটি হেড পোস্ট অফিস এবং সাব পোস্ট অফিস এছাড়াও বিশেষ বিশেষ পোস্ট অফিসে রয়েছে পিপিএফ একাউন্ট খোলার সুবিধা। এক্ষেত্রে যে কোন ভারতীয় নাগরিক যাদের বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে তারা এ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। তবে প্রাপ্তবয়স্ক নয় এমন বাড়ির সদস্যদের জন্য পিপিএফ একাউন্ট খোলা যেতে পারে অর্থাৎ আপনি যদি চান আপনার সন্তানদের নামে পিপিএফ একাউন্ট খুলবেন তাহলে তা খুলতে পারেন।

সাধারণত একজন ব্যক্তির একটি মাত্র পিপিএফ একাউন্ট খোলা যায় অর্থাৎ ব্যাংক বা পোস্ট অফিস যেখানেই আপনি পিপিএফ একাউন্ট খুলবেন না কেন মাত্র একটি অ্যাকাউন্ট খোলা যায় একজন ব্যক্তির। পিপিএফ একাউন্ট এর সময়সীমা হয়ে থাকে ১৫বছরের। কি কি ডকুমেন্ট লাগবে: পোস্ট অফিসে পিপিএফ একাউন্ট খোলার জন্য আপনার সচিত্র প্রমাণপত্র হিসাবে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড বা পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগে। এছাড়াও ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসাবে উপরে বর্ণিত ডকুমেন্ট দেওয়া যেতে পারে এবং লাগবে প্যান কার্ড।

টাকা জমা দেওয়ার সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা: পোস্ট অফিসের পিপিএফ একাউন্ট এ সর্বনিম্ন যে টাকা দিয়ে খোলা যায় তার পরিমাণ হল ৫০০টাকাএবং সর্বোচ্চ ৭০,০০০টাকা ।সর্বোচ্চ এক আর্থিক বছরে এই একাউন্টে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপনি জমা দিতে পারেন এবং এক আর্থিক বছরে আপনি সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা জমা করতে পারেন আপনার পি পি এফ একাউন্ট এ। পিপিএফ অ্যাকাউন্টে সুদের পরিমাণ: ভারত সরকারের তরফ থেকে বর্তমানে পোস্ট অফিসে পিপিএফ অ্যাকাউন্টে সুদের পরিমাণ হল ৭.৬% আয় করের বিশেষ ছাড়: পোস্ট অফিসে পিপিএফ একাউন্টে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা যে আপনি রাখতে পারেন তা কিন্তু সম্পূর্ণ ভাবে আয় করমুক্ত অর্থাৎ এই টাকার উপর আপনাকে কোন প্রকার আয়কর দিতে হবে না।

সাধারণ সঞ্চয়ের সঙ্গে পোস্ট অফিসের পিপিএফ সঞ্চয় এর তুলনা: আপনি যদি কোন ব্যবসা বা সরকারি-বেসরকারি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং মাসিক ২৫ হাজার বা তার বেশি টাকা উপার্জন করে থাকেন তাহলে সাধারণ হিসাবে আপনার প্রতি মাসে ঘর খরচ করার পর হাতে যে টাকা জমা হয় তার পরিমাণ সর্বোচ্চ ১৫হাজার টাকা। এই সঞ্চিত অর্থের মধ্যে আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট হারে টাকা পোস্ট অফিসের পিপিএফ একাউন্ট এ জমা করতে পারেন এবং বাৎসরিক তার পরিমাণ যদি সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে তাহলে ১৫বছরে আপনার সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ২২.৫০লক্ষ টাকা।বাৎসরিক ৭ ৬%সুদের হারে এই সঞ্চিত অর্থ থেকে আপনি সুদ বাবদ পাবেন২৪.৩৫ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ সুদে আসলে আপনার টাকার পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৪৬.৭৫লক্ষ টাকা। যা আপনার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অন্যতম সম্বল হয়ে উঠতে পারে।

এছাড়াও আপনি যদি দৈনিক ১৫০ টাকা করে জমা দেন তাহলে ১৫বছরে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায়৮লক্ষ ১০হাজার টাকা।১৫বছরে ৭.৬%হারে সুদ দিলে তার পরিমান সুদে আসলে হয়ে যাবে ১৬.৮৩লক্ষ টাকা। অর্থাৎ শুধু সুদ বাবদ পাবেন ৮.৭৩লক্ষ টাকা।যা কিন্তু মোটেই কোন কম টাকা নয় । এছাড়াও দৈনিক সর্বনিম্ন ১০০ টাকা করে জমা দিয়ে আপনি বছরে যদি ৩৬ হাজার টাকা প্রতি বছর জমা করতে পারেন। তাহলে ১৫ বছরে মোট সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় ৫.৪ লক্ষ টাকা। ১৫ বছরে ৭.৬% সুদের হারে আপনি সুদে-আসলে পাবেন১১.২২লক্ষ টাকা। তাহলে দেখতে পাচ্ছেন লাখপতি হওয়া থেকে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না অর্থাৎ আপনার লাখপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সবচেয়ে আদর্শ স্কিম হল পিপিএফ স্কিম। তাই সত্বর আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে যোগাযোগ করে খুলে নিন পিপিএফ স্কিম ।কারণ ভবিষ্যতে এই স্কিমে সুদের হার পরিবর্তন হতেও পারে তাই এই সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *