নিজস্ব প্রতিবেদন:প্রবাদ আছে “আমরা মাছে ভাতে বাঙালি” তাই প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা কেউ সখের বসে আবার কেউবা বাণিজ্যিভাবে পেশাগত কারণেও মাছ ধরাতে আনন্দ পায়। এই মাছ ধরতে খাল, বিল, নদ-নদী, মুক্ত জলাশয় এমনটি সাগরেও চলে যায় অনেকেই।
মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে এবং ইলিশ রক্ষায় সফলতা থাকলেও বঙ্গোপসাগরে মাছের পরিমাণ কমছে এবং কিছু কিছু সামুদ্রিক মাছের প্রজাতি অনেকটা নিঃশেষ হতে চলেছে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা।নির্বিচারে সামুদ্রিক মাছ শিকার এবং অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ মাছ ধরা বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগর মৎস্যশূন্য হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ও জরিপের মাধ্যমে এ মূল্যায়ন করছেন গবেষকরা।বাংলাদেশের সাগরে মাছের মজুদের কোনো সঠিক হিসেব নেই আর কী পরিমান মাছ ধরা যাবে তারও সীমা পরিসীমা নির্ধারিত নেই। কারণ সাগরে মৎস্য সম্পদের জরিপ গবেষণা বন্ধ ছিল প্রায় দুই দশক।২০১৬ সালে নতুন জাহাজ আর. ভি মীন সন্ধানী কেনার পর জরিপ শুরু হয়েছে।
সাগরে ১০-২০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত মহীসোপান এলাকায় এই জরিপ কার্যক্রম চালানো হয়।গত তিন বছরের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সামুদ্রিক মাছ নিয়ে একটি প্রতিবেদন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের মেরিন ফিশারিজ সার্ভে ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শরিফ উদ্দীন বলেন, “২০০০ সালের পর থেকে আমাদের ভেসেল বেইজড যে গবেষণা সেটা পুরাপুরি বন্ধ ছিল।
বাংলাদেশ মেরিন ফিসারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্পের মাধ্যমে এটা আবার শুরু করা হয়েছে।””মূলত ২০১৬ সাল থেকে এটা আমরা শুরু করেছি। তিন বছরের প্রাথমিক তথ্যে আমরা দেখছি যে আমাদের সমুদ্রের সার্বিক মজুদ ঠিক থাকলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু মাছের মনে হচ্ছে অতিরিক্ত আহরণ হয়েছে।সামুদ্রিক মৎস সম্পদের অবস্থা নিয়ে গবেষণায় যুক্ত সমুদ্র বিজ্ঞানী সাইদুর রহমান চৌধুরী – যিনি মৎস্য সম্পদ জরিপ জাহাজ আর ভি মীন সন্ধানীর তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণের সঙ্গেও যুক্ত আছেন – বলেন,
এটা আমাদের সায়েন্টিফিক কমিউনিটির জন্য খুবই উদ্বেগের। মাছের বংশ বিস্তারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ রেখে দেয়া যেটা দরকার সেটা যদি আমরা না রাখি তাহলে পরবর্তী সিজনে বংশবৃদ্ধি হবে না।””পৃথিবীর অন্যান্য সমুদ্রের যেমন গালফ অফ থাইল্যান্ড অনেকটা মৎসশূন্য হয়ে গেছে। আমরা চাইনা আমাদের বে অফ বেঙ্গল সেরকম মৎসশূণ্য হয়ে যাক।