শিকারী বানর দিয়ে অসাধারন সার্কাস দেখিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করলেন, কামান্ড দিতেই খেলা দেখাচ্ছে বানর। তুমুল ভাইরাল ভিডিও!

নিজস্ব প্রতিবেদন:দুই টাকার বাদাম কিনে চিবাতে চিবাতে বিকেলে হাটতে বেরিয়েছিলেন।পথিমধ্যে দেখলেন, এক বৃদ্ধ দাদা বাজারের পাশেই বানর নাচ দেখাচ্ছেন। সেই রঙিন পোশাক পরা বানরটি আর তার খেলা দেখার লোভে জনতার ভিড় ঠেলে দাঁড়িয়ে গেলেন। সামনের লোকজন বলছে– ‘দাদা-দাদা – ডিগবাজি দেয়ান’।

সেই দাদা বানরের গলার রসি ধরে টান দিতেই বানরটি ডিগবাজি দিলো।দাদা বানরটিকে একটা কলার লোভ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন – বিয়ে করবি? বানরটি আনন্দে আত্মহারা হয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে জানালো, হ্যাঁ-হ্যাঁ। সবাই হাততালি দিল দেদার। পাশাপাশি কলাটি পুরষ্কার হিসাবে পেল সে।

এরই মধ্যে শুরু হলো বানরটিকে আরো কিছু প্রশ্নোত্তর জিজ্ঞেস করার পালা। সেদিনের কতো মজার প্রশ্ন, আর বানরের মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ অথবা না উত্তর দেয়া, ডিগবাজি দেয়া। কিছু প্রশ্নে লজ্জা পেয়ে মুখ ঢাকা, মাথা নেড়ে সায় দেয়া, উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা, লম্ফ ঝম্প দেয়।

এরইমধ্যে একটি সুন্দরী মেয়েকে দেখে বানরটা শিষ দেয়। দাদা তাকে কড়া শাসন করে। বানরটি তার গলার রশি ধরে টানাটানি করে। দাদার দিকে রেগে রেগে তাকায়। সুন্দরীর কাছে যাবার জন্য প্রতিবাদ করে। দাদা তখন বানরটির লেজ ধরে আচ্ছা করে মচকে দেন। বানরটি কাঁদো কাঁদো ভঙ্গিতে জরোসরো হয়ে যায়।

দাদা বলে– বিয়ের কথা বাদ দে, আগে রাজনৈতিক নেতার ভাব ধর। বানরটি বেশভূষা ঠিকঠাক করে। গলাবাজির ভান ধরে। দাদা বানরটিকে ছেড়ে দেয়। বানরটি দাদাকে ভেংচি কাটে। প্রতিবাদী হয়। দাদা বানরটিকে খাঁচায় ভরার হুমকি দেয়।পরে অবশ্য বানরটি গণতান্ত্রিকভাবে দাদার স্বৈরাচার মেনে নেয়।

বানরটি ভেংচি কেটে অসহযোগ বাদ দিয়ে দাদাকে কনভেন্স করতে থাকে। বোঝায়, কেন তাকে স্বাধীনতা দেয়া হবে না? তার গলায় প্রেসিডেন্সির মালা দেয়া উচিত।এসব খেলা দেখে সামনের সারির প্রগতিশীলরা বানরের গণতান্ত্রিক আচরণে মুগ্ধ হয়ে তাকে পয়সা ছুড়ে দেয়। হাততালি দেয়। সেদিন ছেলেমেয়ের পোশাকে সেজেছিল সেই বানরগুলো।

দাদার কথামতো ওরা বিভিন্ন অভিনয় দেখিয়ে আনন্দ দিচ্ছিল দর্শকদের। নিপুণতার সঙ্গে বানরের কসরত দর্শকদের মোহিত করেছে।বাদাম চিবাতে চিবাতে গণতান্ত্রিক বানর নাচ দেখে মাথা নাড়তে নাড়তে বিকেলের ভ্রমণের ইতি ঘটে। গ্রাম-গঞ্জের বাজারে কিংবা শহর-উপশহরের পার্কে এমন দৃশ্য হয়তো অনেকেই দেখেছেন।

আরো দুই থেকে তিন দশক আগেও এমন বানর খেলা দেখা যেত। তবে এখন আর দেখা যায় না এসব। শুধু নস্টালজিক সেই স্মৃতি যেন মনে পড়ে মাঝেমধ্যে।এমন স্মৃতির বর্ণনা দিতে পারবেন কেবল বর্তমানের বয়োজ্যেষ্ঠরাই। এ সমাজের তরুণ বা কিশোররা এ দৃশ্য হয়তো দেখেনি। দেখবেও না হয়তো। কারণ, পশুপাখি দিয়ে মজা দেখানোর বিষয়টি প্রাণীকুলের প্রতি নিষ্ঠুরতার উদাহরণও বটে।

আর মনব সভ্যতায়ও পরিবর্তন এসেছে, অনেক সংস্কৃতি যেন উপযোগিতা হারিয়েছে ইট কাঠে আবদ্ধ যান্ত্রিক জীবনে। আগেকার মতো বাংলাদেশ আর নেই। এসব ঐতিহ্য এখন প্রায় স্মৃতির মতো।তাইতো ইতি ঘটেছে বানর নাচের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *