নিজস্ব প্রতিবেদন:আইসল্যান্ডের রাজধানী রিকজাভিকের দক্ষিণ-পশ্চিমে ফাগরাডালসফল আগ্নেয়গিরিতে শুরু হয়েছে অগ্ন্যুৎপাত। প্রায় ৮০০ বছর পর আবারও আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটল। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।গত তিন সপ্তাহে আইসল্যান্ডে ৫০ হাজারেরও বেশি ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নুৎপাত শুরুর আগে ফাগরাডালসফলের ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দূর থেকে ৩ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়।
আইসল্যান্ডের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে রিকজাভিক থেকে ৪০ কিলোমিটারের মতো দূরে ফাগরাডালসফলে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। পরবর্তীকালে ওয়েবক্যাম ও স্যাটেলাইটের ছবির মাধ্যমে অগ্ন্যুৎপাত নিশ্চিত হয়।অগ্ন্যুৎপাতের এলাকায় কোস্টগার্ডের হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে যে ছবি সংগ্রহ করা হয় যাতে দেখা যায়, আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা উদগীরণ হয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ছে।
অগ্ন্যুৎপাতে খুব বেশি ছাঁই বের হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই আশা করা হচ্ছে, এর ফলে বিমান চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হবে না। তবে ২০১০ সালে ইজাফল্লাজোকাল আগ্নেয়গিরিতে অগ্নুৎপাতের ফলে সমগ্র ইউরোপে বিমান চলাচল স্থগিত করতে হয়েছিল।উল্লেখ, আইসল্যান্ডে দুটি টেকটোনিক প্লেট বিপরীত দিকে চলার কারণে সেখানে প্রতিনিয়তই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি থেকে ঝর্ণার মতো নির্গত হচ্ছে উত্তপ্ত লাভা।
প্রকৃতির এমন আগুনে রূপ দেখতে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন বহু পর্যটক। রাজধানী রেইকজাভিকের নিকটবর্তী এলাকাটিতে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আইসল্যান্ডে মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করে আবহাওয়া দপ্তর।আইসল্যান্ডের রেইক-ইয়াবিক শহরের কাছে স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে অগ্ন্যুৎপাত শুরু করে ফাগরা ডালস ফিয়াক আগ্নেয়গিরি। এর লাভা ছড়িয়ে পড়ে রেইকেনেস উপদ্বীপের প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে।
আইসল্যান্ডের ভূপদার্থবিদরা জানান, আগ্নেয়গিরি থেকে প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ৫০ হাজার লিটার গলিত পাথর বের হচ্ছে। আগ্নেয়গিরির ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য দেখতে রাজধানী রিকজাভিক থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরের ওই এলাকায় ভিড় করেছে অসংখ্য পর্যটক। দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের নিরাপদ দূরত্বে পরামর্শ দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দফতর।এর আগে, ২০২১ সালের মার্চে সক্রিয় হওয়া আগ্নেয়গিরিটিতে টানা ৬ মাস অগ্ন্যুৎপাত হয়।
বর্তমান অগ্ন্যুৎপাতে ক্ষয়ক্ষতির তেমন আশংকা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কাতরিন ইয়াকব্সদোকতের।আইসল্যান্ড ভূমিকম্পের জন্যও বহুল পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা জানান, পৃথিবীর বৃহত্তম টেকটোনিক প্লেটগুলোর মধ্যে দুটি রয়েছে আইসল্যান্ডের একেবারে নিচে। তাই এখানে প্রতিনিয়ত ছোটবড় বহু ভূমিকম্প সংঘটিত হচ্ছে। এসব ভূমিকম্প কখনো কখনো আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়।
আইসল্যান্ডে ৩২টি আগ্নেয়গিরি সম্বলিত এলাকা রয়েছে, যা বর্তমানে সক্রিয় এবং সংখ্যায় এটি ইউরোপের সর্বোচ্চ। আগ্নেয়গিরি। সক্রিয় হোক, বা সুপ্ত- আগুনের পাহাড়ের কথা শুনলেই মনে আসে উজ্জ্বল লালচে গলিত লাভা আর কালো কালো ধোঁয়ার কথা। কিন্তু আগ্নেয়গিরি থেকে নীল ধোঁয়া বেরচ্ছে এমন কথা শুনেছেন কখনও?পৃথিবীর হরেক বিস্ময়ের মধ্যে এও এক বিস্ময় বইকি। নীল রঙা ধোঁয়াই বের হয় ইন্দোনেশিয়ার এই আগ্নেয়গিরি থেকে।
শুধু ধোঁয়াই নয়, যে লাভা এর মধ্যে থেকে বের হয় তার রঙও আশ্চর্যজনকভাবে নীল।দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় ছোট বড় একাধিক সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ভরতি। তার বেশিরভাগটাই রয়েছে জাভাতে। আগ্নেয়গিরির এক বিশাল অগ্নুৎপাতের ফলেই জাভার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানেই রয়েছে রহস্যময় কাওয়াহ আইজেন আগ্নেয়গিরি। নীল ধোঁয়ায় মোহময়ী রূপ তার।কিন্তু কেন এমন নীলচে ধোঁয়া? নীল রঙা লাভা কেন বের হয় কাওয়াহ আইজেন থেকে?
কী আছে ওই আগুন পাহাড়ের ভিতর?বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা করে জানিয়েছেন, ওই নির্দিষ্ট আগ্নেয় পর্বতের মধ্যে রয়েছে অ্যাকটিভ সলফাতারা। এটি একটি বিশেষ ধরণের আগ্নেয় বাষ্প। এই আগ্নেয়গিরি থেকে যে ধোঁয়া বের হয় তাতে সালফারের মাত্রা থাকে খুব বেশি। ভূগর্ভের বাইরে অক্সিজেনওয়ালা বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে যখনই আসে এই গ্যাস, তার রঙ হয়ে যায় নীলচে। নীল আগুনের হলকাও বেরতে দেখা যায় কখনও কখনও।কিছু কিছু গ্যাস জ্বলতে জ্বলতে তরল সালফারে পরিণত হয়।