নিজস্ব প্রতিবেদন:আমাদের দেশে অনেকে বাড়িতে শখের নানা রকম পাখি পুষে থাকে। এর মধ্যে পোষার জন্য টিয়া পাখি অন্যতম। কারণ টিয়া পাখির খাঁচা খুব একটা বেশি জায়গা দখল করে না এবং টিয়া পাখি বেশ পরিস্কার থাকে। টিয়া বাংলাদেশের অতিপরিচিত, জনপ্রিয় ও সুদর্শন পাখি। পাখি পোষার আগে হাতে যথেষ্ট সময় এবং মনে যথেষ্ট ভালোবাসা আছে কি না, তা যাচাই করুন। সব ঠিক থাকলে পাখি কিনুন দেখেশুনে।টিয়া পাখি যেহেতু পোষা নিষেধ তাই গ্রে প্যারট বা কাকাতুয়া পোষা সবচেয়ে উত্তম।
তারপরেও আমি টিয়া পাখি নিয়েই বলছি।টিয়ার মধ্যে চন্দনা পালাটাই ভালো। চন্দনা কথা বলে বেশ পরিস্কার ভাবে। ২০/২৫ দিন বয়সী বাচ্চা দুটো নিয়ে এলে ভালো হয়। এতে তারা বেশ আনন্দে থাকে। এই বয়সের বাচ্চাগুলোকে হাতে তুলে খাওয়াতে হয়। এই হাতে তুলে খাওয়ানোর জন্যই দ্রুত পোষ মানে। এই বয়স থেকেই যেভাবে তাকে আদর করে শেখানো হবে সে তা-ই শিখবে। আমি হালকা সবুজ রঙের একটা চাদর দিয়ে পাখিটাকে জড়িয়ে কোলে নিতাম, তখন শীত ছিলো। একদিন আমি বাইরে গিয়েছি জরুরি কাজে।
ফিরে এসে দেখি সে ঝুড়ি থেকে নেমে সেই চাদরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে না পেয়ে সে চেনা চাদরের কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলো, এরা বেশ বুদ্ধিমান।চন্দনা টিয়া চেনার সহজ উপায় হচ্ছে ডানার এই লাল রঙের পালক।খাবারের মধ্যে পাখির জন্য ভালো কিছু বেবি ফুড পাওয়া যায়। ভেজানো ছোলা খাওয়াতে হয়। ডালের গুড়ো, চালের গুড়ো, কয়েক রকমের সবজি দিয়ে খিচুড়ির মতো রান্না করে খাওয়ানো যায়। শুরুর দিকে এগুলোই যথেষ্ট। আমার চন্দনাটা ব্রকলি ভাজা দিয়ে ভাতও খেতো বড়ো হওয়ার পর।বেশি বেশি কথা বলা,
আদর করা, নাম ধরে ডাকা এগুলো এই পাখিরা খুব পছন্দ করে। খেলনা পছন্দ করে খুব। সাথে কাঠের টুকরো বা এমন কিছু যা চিবিয়ে সময় কাটানো যায় তা তাদের খুব প্রিয়। খাঁচায় রেখে এই পাখি না পালাই ভালো। বিড়াল পালার মতো করে পালতে হয়। যতো বেশি মানুষের সাথে থাকবে ততো বেশি সে মিশুক হবে। বিরক্ত করা বা রাগানো যাবেনা, এতে খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যায়।ছোট পাখিকে গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। খাওয়ানোর সময় সাবধান থাকলে খুব একটা সমস্যা হয় না।
ভেজা টিস্যু দিয়ে পালক পরিস্কার করে দিলেই যথেষ্ট।যত্নে আর পরিচ্ছন্ন রাখলে খুব একটা ওষুধের দরকার হয় না। আর পাখিটা বড়ো হতে হতে আপনি মোটামুটি একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে যাবেন। কোনো সমস্যা হলে গুগল তো আছেই। অনেক এক্সপার্টের মতামত বা আর্টিকেল পেয়ে যাবেন। চেষ্টা করবেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে।
পাখিরা কিন্তু মানুষের মতো ওষুধে অভ্যস্ত না। খুব সমস্যা হলে তো উপায় নেই কিন্তু ছোট সমস্যায় ঘরোয়া পদ্ধতিই উত্তম।পাখিকে কোন বয়সে কতোবার খাওয়াতে হবে আর কতোটুকু খাওয়াতে হবে তা-ও গুগলে পেয়ে যাবেন। আমি লিখছিনা কারণ লেখা বড়ো হয়ে যাচ্ছে আর পাখি পালার আগেই নিয়ম দেখে যেনো ভয় না লাগে আপনার তাই।শুধু রাতে খাঁচায় রাখবেন। খেলার সময়, খাওয়ার সময়, ঘুমানোর সময় যে আলাদা এটা তাকে শিখিয়ে দিতে হবে। মানুষের বাচ্চার মতো করেই শেখানো যায়, খুব সহজ।