নিজস্ব প্রতিবেদন:লাউ এক প্রকার লতানো উদ্ভিদ যা এর ফলের জন্যে চাষ করা হয়, যা কিনা কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, আর পরিপক্ব অবস্থায় শুকিয়ে এটি বোতল, পাত্র বা নল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।কচি লাউয়ের রং হালকা সবুজ, ভেতরে সাদা রঙের শাঁস।খেয়াল রাখতে হবে। পানি দেওয়ার ফলে পলিব্যাগের মাটি চটা বাধলে চটা ভেঙে দিতে হবে।লাউ আমাদের দেশে একটি অন্যতম সুস্বাদু সবজি।
লাউ সব ধরণের মাটিতে জন্মে। সাধারণত লাউ শীতকালে চাষ করা হয়ে থাকে। লাউয়ের পাতা নরম ও সবুজ বিধায় পাতা ও ডগা শাক হিসাবে এবং লাউ ভাজি ও তরকারী রান্না করে খাওয়া হয়। লাউয়ের চেয়ে এর শাক পুষ্টিকর বেশি। লাউ লতানো উদ্ভিদ তাই সারা বছরই চারা লাগিয় চাষ করা যায়। লাউ বীজ রোপণ করার আগে খেয়াল করে দেখে নিতে হবে আপনার এলাকায় কোন লাউ, লম্বা না গোল লাউ চাহিদা বেশি? যে লাউয়ের চাহিদা বেশি সেই লাউ চাষ করতে হবে।
নিচে লাউ চাষ পদ্ধতি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।লাউয়ের চারা উৎপাদন, বীজতলা তৈরি ও বীজ বপণলাউ চাষের জন্য পলিব্যাগে চারা উৎপাদন করে নিলে ভালো হয়। স্বাভাবিকভাবে আলো বাতাস থাকে এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে। বেড ২০-২৫ সেমি উঁচু করতে হবে।বীজ বপনের জন্য ৮*১০ সেমি আকারের পলিব্যাগ দরকার। অর্ধেক মাটি ও অর্ধেক গোবর মিশিয়ে বা এক তৃতীয়াংশ কম্পেষ্ট সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে।
বীজ গজানোর জন্য মাটির জো ঠিক রাখতে হবে। মাটিতে জো না থাকলে পানি দিয়ে জো করে নিয়ে পলিব্যাগ ভরতে হবে। বীজের সহজ অংকুরোদগমলাউয়ের বীজের খোসা কিছুটা শক্ত বধিায় অংকুরোদগম হতে সময় লাগে। সহজে অংকুরোদগমের জন্য পরিস্কার পানিতে ১৫-২০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে অথবা শতকরা ১% পটাশিয়াম নাইট্রেট দ্রবণে একরাত ভিজিয়ে তারপর পলিব্যাগে বীজ বপন হবে।
বীজতলায় চারার পরিচর্যাচারা অংকুরোদগম হওয়ার পর বেডে চারার সঠিক ভাবে পরিচর্যা করতে হবে। শীতের সময় চারা গজাতে সমস্যা হয়। এজন্য শীতের সময় বীজ গজানোর আগে প্রতি দিন রাতে বেড ঢেকে রাখতে হবে। এবং দিনের বেলাতে খোলা রাখতে হবে। বেডে চারার চাহিদা অনুসারে পানি দিতে হবে।চারার গায়ে পানি না পড়ে সে দিকে মাটি : জৈব পদার্থ এঁটেল দো-আঁশ ও দো-আঁশ মাটি লাউ চাষের জন্য ভাল হয়।জলবায়ু: আমাদের দেশে লাউ চাষের জন্য উপযোগী মৌসুম হলো শীতকাল। বেশি গরমও না
আবার বেশি শীতও না এমন আবহাওয়া লাউ চাষের জন্য ভাল।বীজ গজানোর পর চারার বয়স যখন ১৬-১৭ দিন হবে তখন চারা মাঠে লাগানো উত্তম।মাদা তৈরি এবং বেডে মাদা হতে মাদার দুরত্ব: অবশ্যই মাদার মাটি ঢলো চুন দিয়ে শোধন করে নিতে হবে, মাদা প্রতি ১০০ গ্রামমাদা দূরত্ব মাদা থেকে মাদা ৬,হাত বাই ৭ হাতমাদা গর্ত ১২ ইঞ্চি, প্রস্থ দিগ ১ হাত বাই ১ হাতসার প্রয়োগযতটা পারেন গর্তে পচা গোবর, কচুরিপানা দিয়ে মাটি চাপা দিয়ে দিবেন ৭দিন।
প্রতি মাদায়, সারটি,এস,পি ১০০ গ্রাম, খইল ১০০ গ্রাম, পটাশ ৫০ গ্রাম, বোরন ২০ গ্রাম, জিপসাম ১০০ গ্রাম।মাদায় দিয়ে মাটি ভালো করে উলট পালট করে দিবেন, ৮-১০ দিন, পর বীজ অথবা চারা লাগানো যাবে।চারার পরিচর্যা, সঠিক সময়ে সেচ দেয়া।লাউ গাছের প্রচুর পরিমানে পানি প্রয়োজন হয়।
লাউ গাছের প্রয়োজনীয় পানির অভাব হলে ফল ধারণ ব্যাহত হয় এবং ফল আস্তে আস্তে ঝরে পড়ে। ভালো ফলন পাওয়ার জন্য নালার মাধ্যমে গাছের প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। নালায় পানি দিয়ে জমিয়ে রাখলে গাছ তার প্রয়োজন মতো পানি টেনে নিবে। শুষ্ক মৌসুমে লাউ গাছে ৪-৫ দিন পরপর সেচ দিতে হয়।মালচিং ও বাউনি দেয়ামালচ অর্থ মাটি ঢেকে দেওয়া, আর মালচিং হলো মাটির আর্দ্রতা সংরক্ষণ করা। মাটির রস ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে গাছের গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়াকে মালচিং বলে।