পরিত্যক্ত ব্রিজের নিচে বরশি দিয়ে মাছ শিকার করে তাক লাগিয়ে দিলেন চাচা। বড়শিতে আটকালো র্কাপ এক মাছ! মূহুর্তে ভাগ্যবদলে গেল চাচার! ইন্টারনেটে তুমুল ভাইরাল ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদন:বিরতিহীন ধৈর্যের অপর নাম বড়শি! কথাটি একটু জটিল ঠেকলেও তার আপাদমস্তক শব্দার্থ একই। মানে এখানে ‘বড়শি’ বলতে বড়শির বা ছিপের সহযোগে শখের মাছ ধরাকে বোঝানো হয়েছে।বড়শিতেই প্রতিটি মানুষের ধৈর্যের রসায়ন ধরা পড়ে সহজভাবে।সম্প্রতি এক আদিবাসী উৎসবে বিচিত্রভাবে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হলো ৪০ জনকে। কেউ পারলো।

কেউ পারলো না। হাহুতাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলো অধিকাংরাই। যারা পারলো তাদের সংখ্যা অতি নগণ্য। সংখ্যা বিবেচনার এই সফলতায় আনন্দ তাদের বাঁধভাঙ্গা। খুশি তাদের অট্টহাসিময়।কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া পুঞ্জির খাসিয়া জনগোষ্ঠীর একটি উৎসবকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সেখানে বড়শি দিয়ে বা ছিপের সাহায্যে মাছ ধরার আয়োজন করা হয়েছে। এটি তাদের নিজস্ব রীতিপ্রথা বলে খাসি সম্প্রদায় ব্যতিত অন্য কেউ এই আয়োজনে অংশ নিতে পারেনি।

যারা এখানে অংশ নিয়েছেন, তারা মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন খাসিয়াপুঞ্জি থেকে আগত সৌখিন বড়শিবিদরা।এই উৎসবের অন্যতম আয়োজকের নাম ফিলা পাতমি। তিনি লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির মন্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান)। ফিলা বলেন, আমাদের খাসি ভাষায় একটি সাংস্কৃতিক আয়োজনের নাম ‘খাসি সেং কুটস্নেম’। এর মানে হচ্ছে আমাদের বর্ষপুঞ্জি অনুযায়ী ১৫৭তম বর্ষকে বিদায় ও ১৫৮তম বর্ষকে বরণ। এই আয়োজনের একটি পর্ব বড়শি দিয়ে মাছ ধরা।

দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয় সূর্যোদয়ের পর থেকে সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত।এই আয়োজনে মৌলভীবাজার জেলার প্রায় দশটি পুঞ্জি থেকে ৪০ জন বড়শিবিদ মাছ ধরতে টিকিটে কেটেছেন। প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয় ৫০০ টাকা। এই পুকুরে কার্পজাতীয় মাছসহ রুই, কাতলা মাছ রয়েছে। যিনি সবচেয়ে বড় এবং বেশি ওজনের মাছটি নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর ধরতে পারবেন তাকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয় হবে বলে জানান তিনি।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেল, পুকুরের চারদিকে আধুনিক বরশি নিয়ে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে ব্যস্ত বড়শিবিদরা।

তাদের একজনের নাম গোবিন পকটাই।তিনি বলেন, এবার মাছ ধরতে লোকজন কম এসেছেন। গতবছর এই সংখ্যা ১শ বা দেড়শ জন ছিল।বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা খাসিপুঞ্জি থেকে এখানে মাছ ধরতে এসেছেন জয় পার্সনেম। তিনি বিকেলে দেড় কেজি ওজনের একটি কার্প মাছ বড়শি দিয়ে ধরে নেটের সাহায্যে মাছটিকে পানিতে ভাসিয়ে তাজা রেখেছেন।তার মাছ ধরার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জয় জানান, তিনি আট বছর ধরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত আছেন।

সন্ধ্যার শেষ দিকে এসে দুই কেজি ওজনের একটি কার্ফু মাছ ধরে তালিকার প্রথমে নাম লিখিয়েছেন ইউকি সুচিয়াং। সৌখিন এ বড়শিবিদ এসেছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার খেজুরিছড়ার লাংলিয়া এলাকা থেকে।দারুণ উচ্ছ্বসিত ইউকি বলেন, মনে হয় আমি জিতে যেতে পারি। সারাদিন বসে বসে শেষের দিকে এসে বড়শিতে মাঝারি আকারের কার্ফু মাছ ধরলাম। দারুণ! ভালো লাগছে।এ মাছের বাজারমূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, যেহেতু এটি চাষের মাছ তাই কেজি প্রতি দুশো টাকা হবে। যাই হোক, তারপরও শখ বলে কথা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *