নৌকা থেকে সমুদ্রে পড়ে যাওয়াই ডলফিন মাছ এসে দাওয়া করল সুন্দরী যুবতীকে। কোনো রকম প্রানে বাচল। সাথে সাথে ভাইরাল সেই ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদন: ডলফিন শব্দটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে পানিতে দাপাদাপি করে সাঁতরে বেড়ানো এক উচ্ছল প্রাণীর ছবি। তা ছাড়া পানি থেকে লাফিয়ে বল নিয়ে খেলা করা, মানুষকে আলিঙ্গন করাসহ ডলফিনের বিচিত্র সব কর্মাকাণ্ড হরহামেশা দেখি আমরা। ডলফিনের এমন সাবলীল আচরণের মূল কারণ তো আপনি জানেনই।

জলচর প্রাণীদের মধ্যে ওরা দারুণ বন্ধুসুলভ। বুদ্ধিমত্তায় হার মানাবে অনেক প্রাণীকে। সহজেই মানুষের সঙ্গে মিশতে এদের জুড়ি মেলা ভার।অনেকে ডলফিনকে মানুষের পর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী বলে মনে করেন। এই ধারণা কিন্তু গবেষণাসাপেক্ষ। তবে বুদ্ধির বিচারে প্রাণীদের মধ্যে ডলফিনকে প্রথম সারিতেই রাখা হয়। বুদ্ধি না থাকলে কি আর মানুষের বন্ধু হওয়া যায়!

ডলফিন মানুষের সঙ্গে যে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছে, তার বড় প্রমাণ পানিতে পড়া বিপদগ্রস্ত মানুষমাত্রই জানে। এমন বহু ঘটনা আছে, যেখানে পানিতে ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছে ডলফিন।সামুদ্রিক প্রাণী হলেও সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীগুলোতেও বিচরণ করে ডলফিন। সাধারণত মানুষের আশপাশে থাকতে পছন্দ করে এরা।

এ কারণে লোকালয়ের আশপাশের কোনো নদী বা সমুদ্রে ওদের প্রায়ই দেখা যায়। তাই সমুদ্রে পথহারা কোনো নাবিক যদি ডলফিনের ঝাঁক দেখতে পান, তাহলে তিনি ধরে নিতে পারেন, আশপাশেই হয়তো উপকূল আছে। তার মানে বিপদ থেকে বেঁচে ফেরার আশা আছে। ডলফিন যে কত মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে, তার কোনো লেখাজোখা নেই। প্রতিটি ঘটনাই চমকপ্রদ।একটু ঘেঁটে দেখলে এ রকম আরও অনেক ঘটনা পাওয়া যাবে, যেখানে ডলফিন হয় মানুষের প্রাণ

বাঁচিয়েছে, নয়তো বড় ধরনের বিপদ থেকে মুক্ত করেছে। ডলফিন কেন মানুষকে বিপদে সাহায্য করে, বিষয়টি বুঝতে বিজ্ঞানীরা নিয়মিত গবেষণা করে যাচ্ছেন। শতভাগ নিশ্চিত হয়ে এর উত্তর হয়তো এখনো বলার সময় আসেনি। তবে ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা একটি বড় কারণ। প্রায় মানুষের সমান মগজ আছে এই প্রাণীর৷ এ কারণেই এরা বেশ বুদ্ধিমান।

সালেও অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটে। তবে সেবার টড এনড্রিস নামের এক সার্ফার হাঙরের আক্রমণ থেকে রেহাই পান না। এনড্রিসের ঘাড়ে ও পায়ে কামড় বসায় হাঙর। তবে এবারও উদ্ধারকারী হিসেবে এগিয়ে যায় একঝাঁক ডলফিন। সেবার মৃত্যুর একদম কাছ থেকে নতুন প্রাণ নিয়ে ফিরে আসেন

এনড্রিস। সেদিন ডলফিনগুলো এনড্রিসের পাশেই ছিল, যতক্ষণ না তিনি উপকূলে পৌঁছান। তা ছাড়া যথেষ্ট সামাজিকও এরা। এ কারণেই ওরা নিয়মিত দল বেঁধে জীবন কাটায়, কিংবা বলা যায় জীবনযাপন করে। এখানেই ওদের সঙ্গে মানুষের বড় মিল।ডলফিন যে আমাদের বন্ধু, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু মানুষ কি বন্ধুর মতো আচরণ করছে? ২০২১ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পটুয়াখালীর বিভিন্ন সমুদ্রসৈকতে ২০টির বেশি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে, যা বেশ উদ্বেগ জাগানিয়া। ডলফিনের মৃত্যুর উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ অ্যাকটিভিটির গবেষণা সহযোগী সাগরিকা স্মৃতি মনে করেন, যত্রতত্র জাল ফেলে মাছ শিকার করার কারণে ডলফিন যেমন ধরা পড়ছে, পাশাপাশি আঘাতপ্রাপ্তও হচ্ছে।

তা ছাড়া সুন্দরবনের কিছু অসাধু জেলে বিষ দিয়ে মাছ মারেন। এতে ডলফিনও মারা পড়ে। অন্যদিকে জেলেদের ফেলা নানান ধরনের ছেঁড়া জাল, মানুষের ফেলা আবর্জনা, বিশেষ করে পলিথিনের কারণে ডলফিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।ডলফিন তো আর প্রশ্ন করতে পারছে না। যদি করতে পারত, তাহলে প্রশ্নটি এ রকম হতো—যে ডলফিন তার পাখনা ঝাপটে, লেজ নেড়ে মানুষকে বাঁচিয়েছে, তার প্রতি কি মানুষ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবে না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *