নিজস্ব প্রতিবেদন:পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে একটি হল লাল নেকড়ে। এরা বিলুপ্তপ্রায় নেকড়ে প্রজাতির মধ্যেও অন্যতম। পূর্ব আমেরিকার আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে টেক্সাস পর্যন্ত, উত্তরে পেনসিলভেনিয়া ও দক্ষিণে মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলে এদের উপস্থিতি রয়েছে। বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময় লাল নেকড়ে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
এদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার বড় কারণ হল পশম ও চামড়ার জন্য অবাধে শিকার,আবাসভূমি ধ্বংস এবং খাদ্যের সংকট।পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞানীদের নিরলস চেষ্টায় এদের সংরক্ষণ এবং কৃত্রিম পরিবেশে প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তারের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে পৃথিবীতে বন্য পরিবেশে ১০০ থেকে ১২০টি লাল নেকড়ে রয়েছে। ধারণা করা হয়, লাল নেকড়ে ধূসর নেকড়েদের নিকটাত্মীয়।
এরা দেখতেও অনেকটা ধূসর নেকড়ের মতোই।তবে এরা আলাদা প্রজাতি এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ৫ ফুট, কান লম্বা এবং শরীরে লালচে পশম রয়েছে।লাল নেকড়ে প্রতিবারে ৫ থেকে ৬টি বাচ্চার জন্ম দেয় এবং বাবা-মা উভয়েই বাচ্চাদের লালন-পালন করে। এরা দলবদ্ধ সামাজিক প্রাণী,তবে কখনও একাকী আবার কখনও ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে খরগোশ, ইঁদুর জাতীয় প্রাণী ও হরিণ শিকার করে খায়।রাশিয়ায় ছোট্ট একটি গ্রামে মারিয়া নামক একটি মেয়ে।
ছোটবেলায় চারটি নেকড়ে জঙ্গল থেকে তুলে এনে।এগুলোর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন।মারিয়া ছোটবেলা থেকে গ্রামে বসবাস করে।সে বনের পশু পাখিকে অনেক ভালোবাসতো।সে ছোটবেলা থেকে এসে যখন আস্তে আস্তে বড় হতে লাগল।তখন পূর্ণ বয়স হওয়ার পর তাকে ইভান নামক একটি ছেলের কাছে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।এভাবে তো আর অনেকদিন পর্যন্ত সংসার চলতে থাকে।হঠাৎ করে তার স্বামী একদিন অসুস্থ হয়।এবং সে মারা যায়।
তখন সে একাকীত্ব বোধ করতে থাকে।এমনি করে অনেকদিন পর্যন্ত তার দিনকাল চলতে থাকে। হঠাৎ একদিন সে সন্ধান পায় একটি মনের মধ্যে চারটি নেকড়ে শাবক অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। ছোটবেলায় বাচ্চাগুলোর মা মারা গিয়েছে।বর্তমানে চারটি শব্দ তাই মরার অবস্থা। কেউ যদি এগুলো দায়িত্ব না নেয় তাহলে কিছুদিনের মধ্যে চারটি শাবক মারা যাবে। এগুলো চিন্তা করে মারিয়া এই হিংস্র নেকড়ের পালনের দায়িত্ব নিয়ে নে।
এই চারটি শাবক কে সে তার নিজের সন্তানের মত লালন-পালন শুরু করে দেয়।দিন যায় রাত যায়, এভাবেই নেকড়ে শাবকগুলো বড় হতে থাকে। এবং সে তার মালিকের কথামত চলতে থাকে। আসলে পশু এবং মানুষের মধ্যে মন ভালোবাসার নজির তেমন বর্তমানে দেখা যায় না। আর এই মেয়েটির যা করেছে সম্পূর্ণটাই শহীদদের প্রতি তার ভালোবাসা। এই নেকড়ে গুলো বড় হয়ে এই মহিলার প্রতিদান দিতে ভুলে নাই। কিন্তু মানুষ বিপদে পড়লে তার সঙ্গী খুঁজে।
তার সঙ্গে যখন থাকে সে বিপদ থেকে উদ্ধার করে তখন সেই মানুষটাকে সে ভুলে যায়। মানুষ মানুষের সাথে বেইমানি করতে পারলেও পশু পাখি মানুষের সাথে বেঈমানী করে না। চারটি ছানা বড় হয়ে যখন পরিপূর্ণ বয়স হয়েছে। তখন ওই মেয়েটির বয়স প্রচুর হয়ে গিয়েছে।বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছে তার দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই।
তখন ওই চারটি নেকড়ে ছানা তার লালন-পালনের দায়িত্ব নেয়।এভাবেই এই চারটি নেত্রকোনা এবং ওই বৃদ্ধা মহিলার জীবন চলতে থাকে। আর এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়ার পর থেকেই তুমুল প্রশংসায় ভাসছেন এই মহিলাও চার ছানা।