নিজস্ব প্রতিবেদন:একটি শুকনো গাছের ডালে বাসা বেধেছে মৌমাছি।বেশ মধুও জমা হয়েছে সে বাসায়।চতু্র্দিকে মৌমাছি উড়ছে ক্রমশ। দশ -পনের টি বা তারও বেশি। দ্রুততায় এর ডানা ছাপটানোর সাথে সাথে একটা চমৎকার মৃদুধ্বনি চারপাশকে মুখরিত করে তুলেছে। তবে এই বিপজ্জনক মৌমাছিদের ডেরায় অতর্কিত হামলা চালনার জন্য প্রস্তুত গ্রামবাসী। গ্রামবাসী আক্রমণের পূর্বেই আক্রমন করে বসে এক পাখি।
দুর্ধর্ষ এই পাখিটির নাম হিংস্র ঈগল।ঈগল এক ধরনের বড় আকারের পাখি। এরা যথেষ্ট শক্তিধর, দক্ষ শিকারি।ঈগল সাধারণত বনে, ঘন জঙ্গলে বসবাস করে থাকে।পৃথিবীতে ৬০ প্রজাতির ঈগল দেখতে পাওয়া যায়।বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, মাছ, হাঁস-মুরগির ছানা খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে।একটি পূর্ণবয়স্ক ঈগলের ওজন প্রায় ৩০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। লম্বা হয় প্রায় ৩০-৩৫ ইঞ্চি।
পূর্ণবয়স্ক সুস্থ ঈগল সাড়ে চার কিলোমিটারের বেশি ওপরে উঠতে পারে। ঈগল ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে পারে।শীতকালে এরা তুলনামূলক কম শীত এলাকার দেশে চলে যায়।এরা জনমানব এলাকার বাইরে এবং কমপক্ষে ১০০ ফুট ওপরে গাছের ডালে বাসা তৈরি করে। প্রজাতি ভেদে ঈগল এক থেকে পাঁচটি পর্যন্ত ডিম পাড়ে।ঈগলের দৃষ্টিশক্তি মানুষের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। তিন মাইল দূরের বস্তুকেও তারা স্পষ্ট দেখতে পারে।
ঈগল গড়ে ২০ বছর বাঁচে। খাঁচায় বন্দি এবং চিড়িয়াখানার ঈগলরা আরও বেশি দিন বাঁচে।ঈগল কখনও ছোট পাখিদের সঙ্গে মেশে না বা ওড়ে না। ঈগল সর্বদা জীবিত প্রাণী খায়। আগে থেকে মৃত বা পচে যাওয়া খাবার এরা খায় না।ঈগল কান্না করতে পারে না। ওরা সাঁতারও জানে না।ভিডিওটির ঈগল টি ছিলো ক্লান্ত ঈগল।শিকার ধরার জন্য তীব্র রোদে আকাশে উড়ছে।বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আশ্রয়ের জায়গা খুঁজছে।
চতুর্দিকে বন জঙ্গল খোজাখুঝির পর অনেক দূরে একটি শুকনা গাছ দেখতে পাই। ক্লান্ত ঈগল আশ্রয় নেওয়ার জন্য ওই গাছে চলে যায়। গাছের উপর বসতেই ওই গাছে ছিল মৌমাছির চাক।সে অজান্তেই বসে পড়ে ওই মৌমাছির চাকের উপর। বসতেই মৌচাকের উপর যে মৌমাছিগুলো ছিলো সেগুলো ওই ঈগল কে আক্রমণ করতে শুরু করে।ঈগল’ এক প্রকারের শিকারী পাখি। সারাবছর এদের দেখতে পাবেন না।সারাদেশে আছে;
তবে শীত মৌসুমে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। ঈগল’ এর প্রিয় খাবার হলো নিজে শিকার করা প্রানী।ওর শরীর পুরোপুরিভাবে পালক দিয়ে ঢাকা। ফলে মৌমাছির চাকে বসলেও বলতে পারেনা। মৌমাছিরা ঈগল এর শরীরে হুল ফুটাতে পারে না। কারণ, পালকের উপর তো হুল ফুটানো সম্ভব নয়। শুধু ওর শরীরের একটি জায়গা তাহল চোখের পাশ অর্থাৎ চঞ্চু’র (ঠোঁট) ছোট্ট জায়গাটা। আর থাকল পায়ের শক্ত অংশ; এটাতেই হুল ফুটানো সম্ভব নয়।
আসলে ওর শরীরে খোলা জায়গা নেই; সবই পালকে ঢাকা।তাই মৌমাছিরা সুবিধা করতে পারে না মৌচাক ছাড়াও মাটিতে ইঁদুর, ছুঁচো, আহত ছোটপাখিসহ অন্যান্য ছোট প্রাণীদের ‘হানি-বার্জাড’ ধরে ধরে খায় বলে জানান। নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইনাম আল হক বলেন, গাছের ডালে, দালান কোঠার কার্নিসের নিচে বাসা হলে ভালো করে লক্ষ্য করলে অনেক সময় দেখা যায় এগুলোর আশেপাশে ‘হানি-বার্জাড’ চুপ করে বসে রয়েছে।
এদের আকার প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার এবং দেহ কালচে-ধূসর। থুতনিতে লম্বা সাদা রং। ডানার নিচে সারি সারি কালো লাইন। চোখ কমলা লাল এবং পায়ের আঙ্গুল হলুদ। পুরুষ পাখিটির লেজে দুটো প্রশস্ত কালো ফিতা এবং স্ত্রী পাখিটির লেজে দু’টি কালো ফিতা রয়েছে।কোনো গাছের গোপন জায়গায় মৌমাছির নতুন বাসা হয়েছে এমন কোনো স্থানে আপনি যদি কয়েকদিন যান তবে এই ‘হানি-বার্জাড’ মৌচাকের আশেপাশে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে জানান প্রখ্যাত পাখিগবেষক ইনাম আল হক।