অভিনব পদ্ধতিতে বাজ পাখি দিয়ে ফাদ পেতে তিতি পাখি কে বোকা বানিয়ে চাচার ছলনাময় ডাকে সাড়া দিতে এসে বন্দি তিতি। পাখি ধরার এমন অভিনব পদ্ধতি তুমুল ভাইরাল নেটদুনিয়ায়

নিজস্ব প্রতিবেদন:শিকারিদের উৎপাতে দিন দিন বিপন্ন হচ্ছে বুনো তিতির। পাহাড়ের হাটে প্রকাশ্যে চলছে এসব বন্যপ্রাণীর বিকিকিনি। আইনে বন্যপ্রাণী বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও বন বিভাগের উদাসীনতার কারণে শিকারিরা দেদার বন্যপ্রাণী শিকার ও বিক্রি করছে। শিকারিদের উৎপাতের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য অঞ্চল বন্যপ্রাণীর দ্রুত কমে যাচ্ছে।

বিশেষ করে মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকা বন্য প্রাণীগুলো শিকার করছে শিকারিরা।সম্প্রতি খাগড়াছড়ির সদর হাটে বুনো তিতির বিক্রি করতে আসে এক শিকারি। তিনি জানান, অনেক গভীর জঙ্গল থেকে এক জোড়া বুনো তিতির শিকার করেন তিনি। বাজারে নিয়ে এসে তিতির দুইটি প্রায় ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তিনি।’ মাংস সুস্বাদু হওয়ায় শিকারিরা বুনো তিতির শিকার করে।

এছাড়া খাগড়াছড়ির শহরের মধুপুর বাজার, স্বনির্ভর, মাটিরাঙ্গা, দিঘীনালা, মাচালংসহ বিভিন্ন হাটে প্রকাশ্যে বিক্রি হয় বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর মাংস। স্থানীয়রা বলেন, এক সময় হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী থেকে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রাণিজ আমিষের অভাব পূরণ হতো। কিন্তু বর্তমানে বাজারের সঙ্গে স্থানীয়দের যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় হরিণ, বুনো তিতির, বনমোরগ শিকার করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়।

অনেকে শিকার করাকে জীবিকার মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে।কালো তিতির বনে থাকে। এরা মূলত ভূ-চর পাখি। প্রতিটির ওজন প্রায় ১ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের দৈর্ঘ্য ৩৪ সেমি.। এরা দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়ায়। বুনো তিতির পুরুষ ও স্ত্রী চেহারা আলাদা। তিতিরের রং ঘন কালচে। পুরুষ তিতিরের পিঠে ছোপ ছোপ সাদা রং থাকে। এদের ঝুটি লালচে। কালো তিতিরের বৈজ্ঞানিক নাম Francolinus।

কালো তিতিরের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ ছোট মুরগি। কালো তিতির ঘন ঝোপের পাহাড়ে বিচরণ করে বেশি। শিকারিরা গভীর জঙ্গলে ফাঁদ পেতে এদের শিকার করে। এরা সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। শিকারিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য এরা পালকের সাহায্যে উড়ে বেড়ায়। শিকারিদের উৎপাতের কারণে কমে যাচ্ছে বুনো তিতিরের প্রজনন। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম।

স্ত্রী তিতির ডিম দেয়ার ১৮-২০ দিন পর ফুটে বাচ্চা জন্মায়।পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, ‘মানুষের রুচির পরিবর্তন না হলে বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধ হবে না একই সঙ্গে বন্যপ্রাণী রক্ষা ও বন্যপ্রাণী শিকার নিয়ন্ত্রণ আইনের কঠোর প্রয়োগ ঘটাতে হবে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় হরিণ, বনমোরগ, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ খুব জরুরি। তা না হলে একদিন প্রাণীশূন্য হবে পার্বত্য অঞ্চল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *