নিজস্ব প্রতিবেদন:জাত উন্নয়নের কাজ করছি আমরা। যে জাত বেশি ডিম দিবে কিন্তু রোগ বালাই কম হবে এমন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। আগে শুধু দেশী হাঁস ছিল যা বছরে ৪০-৫০ টি ডিম দিতে পারতো। কিন্তু এখন অনেক জাত আছে যেগুলো থেকে বছরে দুশ’র বেশি ডিম পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
আমরা আরও ভালো জাত উদ্ভাবন করতে চাই। সেজন্য কাজ চলছে,” বলছিলেন মিস্টার আমিন।তবে জানা গেছে হাঁসের ডিম ও মাংস উৎপাদনে খামারিরা যাতে বেশি লাভ করতে পারে আবার মানুষও যাতে ন্যায্যমূল্যে এগুলো পেতে পারে এজন্য দেশি বিদেশি জাতের হাসের সংকরায়ন নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে নানা পর্যায়ে।
সরকারি হিসেবে এখন দেশে হাঁসের খামার আছে প্রায় আট হাজার। তবে নিবন্ধিত খামারের বাইরেও ব্যক্তি উদ্যোগে দেশের নানা জায়গায় গড়ে উঠেছে হাঁসের খামার। তাই সব মিলিয়ে প্রকৃতপক্ষে হাঁসের সংখ্যা বা নিয়মিত তা থেকে কি পরিমাণ ডিম উৎপাদন হয় তা নিরূপণ করা কঠিন।নেত্রকোনার হাওড় এলাকায় প্রায় ত্রিশ হাজার হাঁসের একটি খামার আছে ।
গবেষক ও খামারিরা বলছেন হাঁস একেবারে প্রাকৃতিক পানি থেকেই মাছ, ঝিনুক, শামুক, পোকামাকড়, জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদি খেয়ে থাকে বলে তাদের অন্য খাদ্যের প্রয়োজন খুব কম। আবার পুকুরে হাঁস চাষ করলে সার ও মাছের খাদ্য ছাড়াই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব।বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে তিন ধরনের হাঁস সুপরিচিত- পাতি হাঁস, চীনা হাঁস আর রাজহাঁস।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এসব হাঁস দীর্ঘকাল ধরেই সহজভাবেই লালন পালন করা সম্ভব হচ্ছে।তাছাড়া দেশের যে কোন জায়গাতেই হাঁস চাষ সম্ভব বলে বলছেন সরকারি হাঁস প্রজনন খামারের ব্যবস্থাপক সারোয়ার আহমেদ। তবে পুকুরে চাষ করলে হাঁস থেকে বেশি লাভ আসতে পারে কারণ এখানেই হাঁস বেশি প্রোটিন পায়।
বাংলাদেশে এখন দেশী হাঁসের বাইরে খাকি ক্যাম্পবেল, জিংডিং, ইন্ডিয়ান রানার, পিকিং ও মাসকোভি জাতের হাঁস বেশি দেখা যায়।এর মধ্যে দেশী হাঁস ডিম ও মাংস উৎপাদন করে থাকে, বছরে ৭০-৮০ টি ডিম দেয়। কিন্তু উন্নত ব্যবস্থাপনায় এগুলো ( দেশি সাদা ও দেশি কালো) বছরে প্রায় ২০০-২০৫ টি ডিম দিতে সক্ষম।খাকি ক্যাম্পবেল হল ডিম উৎপাদনের জন্য।
বছরে এ ধরণর একটি হাঁস গড়ে আড়াইশ থেকে তিনশ ডিম দিতে পারে।বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জের অনেক বাড়িতেই দল বেঁধে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় গলা লম্বা ও লম্বা ঠোটের এক ধরণের হাঁসের -যেটা পরিচিত রাজহাঁস নামে।সরকারি তথ্য বাতায়নে বলা হয়েছে রাজহাঁস তার পারিপার্শ্বিক প্রতিটি জিনিসের সঙ্গে খুব সহজেই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে এবং সেই সুবাদে যে কোন অপরিচিতি শব্দ, লোকজন, জন্তু, জানোয়ার –
দেখামাত্র এরা প্যাঁক-প্যাঁক শব্দ করে আশপাশের সকলকে তটস্থ করে তোলে।এমনকি প্রবল উত্তেজনায় অনেক সময় আক্রমণ পর্যন্ত করে বসে। রাজহাঁসের মধ্যে পাহারাদারি কাজে চীনা রাজহাঁস বেশি দক্ষ।রাজহাঁসের ডিম ও মাংস যেমন পাওয়া যায় তেমনি রাজহাঁসের পালক দিয়ে গদি, লেপ, তোষক, তাকিয়া, কুশন এক কথায় বসবার এবং হেলান দেবার সব জিনিস তৈরি করা যায়।